তোমার মনে লুকিয়ে থাকা যত সব পোলাপাইন্না চিন্তা ভাবনা নিয়ে বিডি এলিয়েন ।
এই ব্লগটি সন্ধান করুন
শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১২
ফাঁড়া (২য় পর্
(২) ঢাকা ইউনিভারসিটি থেকে আমি ম্যানেজমেন্টে ফাস্ট ক্লাসফাস্ট হয়েছিলাম । তাই ইউনিভারসিটিতে চাকুরী ও ছিলো পাকা । জয়েনও করেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতেই বুঝলাম শিক্ষকতা আমার জন্য নয় ।শিক্ষক হতে হলে যে জ্ঞান ,যে ধর্য্য থাকা প্রয়োজন তার কোনটাই আমার ছিলো না । তাছারা প্রতিদিন একই ক্লাস । একই লেকচার । অল্পদিনেই কেমন হাপিয়ে উঠি । তাই বাবার মত না থাকা সত্তেও চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে যোগ দিলাম ওয়ান্ড ব্যাংকের একটি রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টে । আজ ঢাকা তো কালরাজশাহী পরশু দিনাজপুর । দারুনলাগছিল আমার । বেশ ফুরফুরে মেজাজেছিলাম কয়েকটি দিন । কিন্তু ঐ ফারাআমার পেছন লেগেই ছিলো । একটি প্রজেক্ট নিয়ে রওনা হয়েছি ঢাকার অদূরে কালিগন্জে । সঙ্গে ওয়াল্ড ব্যাংকের গাড়ী । আষার মাস ।আকাশ এই মেঘলা তো এই পরিস্কার । এই হাঁসছে এই কাঁদছে । মফসলে থাকার ফলে আমি রোড ঘাট কোথাও তেমন চিনিনা । সে ক্ষেত্রে ড্রাইভার রমিজ মিয়াই ভরসা ।ঝানু লোক । বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই যে ব্যাটা চিনে না বা যায়নি । তিন দিনের কাজ । দু’দিন থাকতে হতে পারে। শেষ দিন ফিরে আসবো । এদিকে আমার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখা হচ্ছে পুরোদমে । বোনদের বিয়ে হয়ে যাওয়াতে বাসা প্রায় খালি । তাই মা,বাবা চাচ্ছিলেন ছেলের বউ দিয়ে শূন্য বাড়ী পূণ্য করতে । আমরা রওনা হয়েছি দুপুর ২টারদিকে ।রমিজমিয়া বলেছে রাস্তা ঘাট ভাল হলে তিন কি চার ঘন্টায় পৌছে যাওয়া যাবে। সারাদিনই আকাশ কেমন মেঘলাহয়ে আছে । সকাল থেকে কয়েক পশলা বৃস্টি হয়ে গেছে । আমিগাড়িতেচোখ বন্ধ করে বসে আছি । ঘুমিয়েই গেছিলাম । হঠাৎ প্রচন্ড ব্রেক কষার শব্দে সেই সঙ্গে ঝাকিতে ঘুমভেঙ্গে গেলো । চোখ খুলে দেখি রমিজ মিয়া একটি মেয়ের সঙ্গে বেশ জোড়ে জোড়ে কথা বলছে । কি হয়েছে রমিজ ?আমি জিজ্ঞেসকরতে রমিজ মিয়া বললো দেখুন না স্যার ; বলা নাই কওয়া নাই। কোথা থেকে গাড়ির সামনে এসে পড়লো মেয়েটা। আর একটু হলে তো মরতো । তখন তো আমাকে জেলের ভাত খেতে হতো । এখন সড়তে বলছি তাও সড়ছেনা । এ্যাই যে সরেন । সরেন বলছি । রমিজ হম্বি তম্বি করছে । আমি বাহিরে তাকিয়ে দেখলাম সন্ধ্যা হয়েআসছে ।গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে একটি মেয়ে। মেয়েটির বয়স আনুমানিক বিশবাইশ হবে । শরীরে বেশ দামি পোষাক । দেখে গ্রাম্য মেয়ে বলে মনে হয় না । শরীরের রং বেশ ফরসা । আমি হাতের ইশারায় মেয়েটাকে কাছে ডাকলাম । মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে আমারদিকে এলো । গাড়ীর গ্লাস নামিয়ে আমি জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার?কোন সমস্যা ? মেয়েটি মাথা নেড়ে যা বললো তা হলো । সে এই গ্রামে নতুন এসেছে । বাসা থেকে বেড় হয়ে পথহারিয়ে ফেলেছে । বাধ্য হয়ে সাহায্যের জন্য আমাদের গাড়ি থামিয়েছে । আমি বললাম আমরা ও তো এখানকার কিছু চিনি না । আপানাকে কি ভাবে সাহায্য করবো ? মেয়েটি বললো জ্বী, আমি কালিগন্জ জমিদার বাড়িতে যাবো । প্লিজ আমাকে একটু পৌছে দিন । জমিদার মোসলে উদ্দিন আমার দাদু হন । যে কাউকে বললেই জমিদার বাড়ী দেখিয়ে দেবো । প্লিজ একটু পৌছে দিন না । মেয়েটি বলার ভঙ্গিতে কিছু একটা ছিলো আমিনা করতে পারলাম না । দরজা খুলে দিয়ে আমি ওপর পাশে চেপে বসলাম । রমিজকে বললাম আগে জমিদার বাড়িতে যেতে । মেয়েটি গাড়িতে বসতেইকেমন একটা চাপা ফুলের গন্ধেনাকে ভেসে এলো । আমি চোখ বন্ধ করে আছি । মেয়েটি ও চুপ করে আছে । এর মধ্যে টের পেলাম আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে । মেয়েটি রমিজকে তারাদিচ্ছে তারাতারি যাবার জন্য । রমিজ চোখ মুখ শক্ত করে গাড়ি চালাচ্ছে ।বোঝা যাচ্ছে পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়ি চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।মেয়েটিকে আমি জিজ্ঞেষ করলাম আপনি কোথায় থাকেন ? মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে বললো আমার নাম এলেনা । আমি নিউইর্য়কে থাকি । বাবার সঙ্গে গতকাল এসেছি ।আজ আমারবিয়ে । ঘুরতে ঘুরতে কি ভাবেযেএত দূর চলে এসেছি বুঝতে পারছি না ।আজ আপনার বিয়ে ? আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেষ করলাম । হ্যা । আজ আমার বিয়ে । মেয়েটি গম্ভির মুখে বললো । গ্রামের সরু রাস্তা । তার উপরে বৃষ্টি । আমি রমিজ কে তারা দিতে সাহস পাচ্ছি না ।তা ছাড়া মেয়েটিকেআমার কেমনজানি ভাল লাগছে । এই যে মেয়েটি অস্থির হয়ে পাশে বসেআছে আমার কাছে তা কেমন জানিভাল লাগছে । মনে হচ্ছে মেয়েটি যখন গাড়ি থেকে নেমে যাবে তখন আমার কষ্ট লাগবে ।হয়তো আমি মরে যাবো । অদ্ভুতএক মায়া কাজ করছে আমার ভেতর। নিজের এলো মেলো চিন্তায় আমি নিজেই অবাক হলাম । চাপাফুলের গন্ধে পুরো গড়ি মো মোকরছে । বাহীরে ঝুম বৃস্টি ।এ যেনো এক অন্য জগত ।চলবে.........
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন